ডেইরি, পোল্ট্রি,মৎস্য ও কৃষিবিষয়ক অনলাইন নিউজ ও ভিডিও পোর্টাল

সর্বশেষ :

    চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর জিম্মী কাহিনীঃ এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধির স্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন

    সেবককণ্ঠ রিপোর্ট
    চট্টগ্রাম পশ্চিম বাকলিয়া ডিসি রোডের মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র মো. হাবিব ও মো. হাবিবের স্ত্রী রীনা বেগমের বিরুদ্ধে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্বামীকে দীর্ঘ চার বছর জিম্মী করণ ও তার স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ আগস্ট সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মুরাদের স্ত্রী জেসমিন আকতার এ অভিযোগ করেন।
    বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি মুরাদের স্ত্রী জেসমিন আকতার লিখিত বক্তব্যে জানান, দীর্ঘ চার বছর মুরাদ টাওয়ারে অবরুদ্ধ রেখে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি মুরাদের স্ত্রী জেসমিন আকতারকে যৌন ও পৈশাচিক নির্যাতন করেছে মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র মো. হাবিব, মো. হাবিবের স্ত্রী রীনা বেগম, রুমা আকতার (৩২), মৃত আবুল কাশেম’র পুত্র মোঃ ইফতেখার

    (৫৪), মৃত আবুল কাশেম’র স্ত্রী কমরুন নাহার (৪৫)। এই ব্যক্তিগণ পরস্পর যোগসাজসে আমার বুদ্ধি প্রতবন্ধী স্বামীর মানসিক অসুস্থতার কথা গোপন করে আমাকে তার সাথে বিবাহ দেন এবং আমার স্বামীর ঘরে তারা অবস্থান করে আমাকে শশুর বাড়ীতে কাজের লোকের চাইতে খারাপ করে মোঃ হাবিব আমাকে দিনের পর দিন নির্যাতন করে শ্লীতাহানি করে এবং সকলে উক্ত কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা করে। এমনকি তারা আমার স্বামীর সম্মুখে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন পূর্বক শ্লীতাহানি করত। আমার সাথে বিগত ১২/০৬/২০১৮ মোঃ হাসান মুরাদ, পশ্চিম বাকলিয়া, চট্টগ্রাম এর সাথে ইসলামী শরীয়াহ বিধান মোতাবেক বিবাহ হয়। আমার স্বামী ঠিকানায় হাবিব ও রীনা একই ফ্ল্যাটে অবস্থান করত। আমি বিবাহের পূর্বে শুনাক্ষরে জানতাম না যে, আমার স্বামী একজন মানসিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, রিনা বেগম আমার শ্বশুর মরহুম হাজী মোঃ ইউসুফ সওদাগর এর পালক কন্যা এবং মোঃ হাবিব পালক কন্যার স্বামী। আমার বিবাহ এর পূর্বে হাবিব ও রীনা তাদের প্রকৃত পরিচয় গোপন করিয়া রীনা নিজেকে মরহুম হাজী মোঃ ইউসুফ সওদাগর এর একমাত্র কন্যা দাবী করে এবং তার ছোট ভাই আমার স্বামী অতীব সহজ-সরল লোক বলিয়া বিবাহ কার্য সম্পন্নক্রমে আমাকে উল্লেখিত বাড়ীতে নিয়ে যায়। আমার স্বামীর গৃহে প্রবেশ এর পর হতে হাবিব ও রীনা প্রকৃত পরিচয় আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠে। মোঃ ইফতেখার ও কামরুন নাহার আমার বিবাহের উকিল হিসেবে কাজ করে। আমার বিবাহের ১৪ দিন পরে আমার পিত্রালয়ে আসা যাওয়া উপলক্ষ্যে কক্সবাজারস্থ তার পিত্রালয়ে সকলে বেড়াতে যায়। পিত্রালয়ে যাওয়ার পর সকলে আমাকে পিত্রালয়ে একটি রাতের জন্যও অবস্থান করতে দেইনি। আমি একজন এস.এস.সি. পাশ মহিলা হই, শ্বশুরালয়ের পরিপার্শ্বিকতা, স্বামী, হাবিব ও রীনা সম্পর্কে আমার বৃদ্ধ মাতা ও বোনকে অবহিত করি। আমি পিতাহীন গরীব অসহায় পরিবারের কন্যা হওয়ায় আমাকে সবকিছু ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেন। আমি উপায়ান্তর না দেখে নিশ্চুপ থাকি এবং তাদের নির্যাতনে মানসিক হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছি। আমি স্বামীর গৃহে আসার পর আমার স্বামীকে নিয়ে সংসার জীবন শুরু করি। হাবিব ও রীনাসহ একই ফ্ল্যাটে অবস্থান করি। যেহেতু আমার স্বামীর শারীরিক গঠন ঠিক থাকলেও মানসিকভাবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তাই হাবিব ও রীনা আমাকে রাতে তার শোয়ার রুমের দরজা খোলা রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করতেন। ইতিমধ্যে আমার প্রতি হাবিবের লোলুপ দৃষ্টি পরিলক্ষিত হয়। যাহা আমি বুঝিতে পেরে নিজেকে সর্বদা সতর্ক রেখে সংসার জীবন অতিবাহিত করতে থাকি। আমার স্বামী যেহেতু মানসিকভাবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সেহেতু আমার স্বামী বিবাহের পর থেকে ১ মিনিটের জন্যও বাসা থেকে বের হয় না। যেহেতু স্বামী মানসিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সেহেতু স্বামী কোন সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারতেন না। আমি ও আমার স্বামীর দায়দায়িত্ব সবকিছু রীনা অর্থাৎ আমার স্বামীর পিতার পালক কন্যা নিজে পরিচালনা করতেন। আমি অনেক সময় রীনার নিকট একটি মোবাইল ফোন আবদার করলে বিভিন্ন গালমন্দের শিকার হই। বিবাহের ১৫ দিনের মধ্যেই অর্থাৎ ৩০/০৭/২০১৮ ইং হাবিব আমার স্বামীর সম্মুখে আমার শোয়ার কক্ষে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গভঙ্গি ও বিভিন্ন ধরণের কু প্রস্তাব করলে আমি রীনাকে অর্থাৎ হাবিবের স্ত্রীকে বিবাহের ঘটক মোঃ ইফতেখার ও কমরুন নাহারকে অবহিত করি। তারা হাবিবের এই ধরনের আচরণে কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখাইয়া উল্টো আমাকে গালাগালি করেন এবং প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতেন। তখন থেকে সকলে আমাকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক রেখে হাবিবের বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানি, শ্লীতাহানী করত। আমি প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে সকলে আমাকে বিদেশে পাচার করে দিবে মর্মে হুমকি প্রদান করত। তাই আমি মুখ বুঝে সব শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতাম। আমার গর্ভে ইতিমধ্যে ১ কন্যা সন্তান জন্মলাভ লাভ করে। যার বর্তমান বয়স ৩ বছর।
    মুরাদের স্ত্রী জেসমিন আকতার আরো জানান, আমার স্বামী শতকোটি টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও তার নামে কোন ধরনের ব্যাংক একাউন্ট জমাজাতি কিংবা তাদের সম্পত্তির যাবতীয় উপার্জনের টাকা হাবিব ও রীনা ভোগ করতেছে। আমার স্বামীর ১০০/- একশত টাকা পর্যন্ত খরচ করার উপায় ছিল না। যেহেতু সেই মানসিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আমি ইতিপূর্বে হাবিবের যৌন নিপীড়নে করলে পড়ে নিজেকে রক্ষা করতে গিয়া সকলের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। রীনা স্থানীয় ডাক্তার এর নিকট চিকিৎসা করাইতেন। কিন্তু কোন ধরণের মেডিকেলে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করার সুযোগ দিত না। আমার বিবাহের পর হতে আমার স্বামীর গৃহে অবস্থান কালে কয়েকশত বার হাবিবের দ্বারা যৌন নিপীড়ণের শিকার হলেও হাবিব আমার স্বামীর সম্মুখে তার যৌন কামনা চরিতার্থের উদ্দেশে আমাকে চুলের মুটি ধরিয়া বিছানায় ফেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে স্পর্শ করার চেষ্টা করলে আমি শোর চিৎকার শুরু করি। এমতাবস্থায় পার্শ্ববর্তী রুম থেকে রুমা আকতার আগাইয়া আসলে আমাকে মারধর কিল, ঘুষি মারতে মারতে বিছানাই লুটিয়া ফেলেন এবং হাবিব আরো উত্তেজিত হয়ে আমার লজ্জাস্থানে স্বজোরে আঘাত কেিল আমার লজ্জাস্থান দিয়ে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে থাকে এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরবর্তীতে রীনা স্থানীয় ডাক্তার দিয়া দীর্ঘদিন চিকিৎসার মাধ্যমে কিছুটা সুস্থতা লাভ করি। ইতিপূর্বে আমার বৃদ্ধা মাতা আমার স্বামীর উল্লেখিত ঠিকানায় আমার সাথে দেখা করতে আসলেও সকলের বাধার মুখে ব্যর্থ হয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন লোকজনের কাছে আশ্রয় নেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারের আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মানবাধিকার নেত্রী , সাবেক এম.পি. ও রাষ্ট্রদূত ওসমান সরওয়ার আলম চৌধরীর সুযোগ্য কন্যা নাজনীন সরওয়ার কাবেরীর সহায়তায় আমাকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন।
    সর্বশেষ ঘটনার তারিখ ০২/০৮/২০২২ ইং তারিখ বিকাল ৪ টায় হাবিব পুনরায় যৌনকামনা চরিতার্থের উদ্দেশ্যে আমার গায়ে হাত দিলে আমার শোর চিৎকার করিলে হাবিব যৌনকামনা চরিতার্থে ব্যর্থ হইলে রীনা অন্য রুম থেকে এসে আমার গলা চেপে ধরে মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করে। রীনা আমাকে এই লজ্জাজনক স্থানে স্বজোরে লাথি মারে রুমা আকতার, মো. ইফতেখার ও কামরুন নাহার আমার চুলের মুঠি ধরে টানাটানি করে ও কিল, ঘুষি মেরে নিচে ফেলে দেয়। সর্বশেষ বিগত ০৩/০৮/২০২২ ইং তারিখ সময় অনুমান বিকেল ৫ টার সময় মানবাধিকার কর্মী বিশিষ্ট মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী নাজনিন সরওয়ার কাবেরীর নেতৃত্বে স্থানীয় দুজন মহিলা। কমিশনার যথাক্রমে ১) শাহিন আকতার রুজি ও সংরক্ষিত আসন-০৬, ওয়ার্ড নং- (১৭, ১৮, ১৯) এর মহিলা কমিশনার ও ১১.২৫, ২৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা কমিশনার মিসেস হুরে আরা বিউটি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ উল্লেখিত ঠিকানায় উপস্থিত হয়ে ৬ ঘন্টার মত বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ২ শিশু সন্তান সহ আটক অবস্থা হতে আমাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কমিশনারগণ বাকলিয়া থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরবর্তীতে আমার শারীরিক অবস্থা বিবেচনাক্রমে স্থানীয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। উক্ত বিষয়ে আমি বিগত ১০/০৮/২২ইং তারিখে উপরোল্লেখিত ব্যক্তিগণের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১, চট্টগ্রাম,আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। মামলা নং-২২৬/২২ইং (বাকলিয়া), নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত-০৩) এর /১০/৩০ ধারা । মামলা পবিচালনা করেন ল‘ইয়ার্স ফেরন্ড ক্লাব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ- সম্পাদক এডভোকেট আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক ও ল‘ইয়ার্স ফেরন্ড ক্লাব বাংলাদেশের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মোঃ ইব্রাহিম সহ ১০/১২ জন আইনজীবী। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলা আমলে গ্রহণ করে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, চট্টগ্রামকে নির্দেশ প্রদান করেন।উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মানবাধিকার নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী,বিশিষ্ট নারী ও মানবাধিকার নেত্রী নুরজাহান খান,চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শাহিন আক্তার রোজি,মিসেস হুরে আরা বিউটি,মহানগর জাতীয় পাটির সভাপতি মো জাহাঙ্গীর আলম সহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতা ও সাংবাদিকবৃন্দ।

    Share on facebook
    Facebook
    Share on twitter
    Twitter
    Share on linkedin
    LinkedIn
    Share on whatsapp
    WhatsApp
    Share on email
    Email