
বিশ্বজুড়ে অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ স্ট্রোক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ডেটা অনুযায়ী, ২০২০ সালে কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত প্রতি ছয়জনের একজনের মৃত্যু হয়েছে স্ট্রোকে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
স্ট্রোক মানে হার্ট অ্যাটাক কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে কারও কারও মধ্যে। এক বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।
১. স্ট্রোক আমরা জানি, এটা হচ্ছে ব্রেনের অসুখ। দর্শকবৃন্দ আপনারা জানেন অলরেডি। স্ট্রোক হার্টের অসুখ না। যেকোনো রক্তনালির অসুখ, যখন যে জায়গায় হয়, সেই হিসাবে সেটার নাম বা লক্ষণ। যেমন: এটা হার্টের রক্তনালিতে হলে বলা হয় হার্ট অ্যাটাক। যখন ব্রেনের রক্তনালিতে হয়, এটা ব্রেন অ্যাটাক বা স্ট্রোক। যখন পেরিফেরি, পায়ের রক্তনালিতে হয়, পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ। সবকিছুতে আসলে রক্তনালির লুমেনটা ন্যারো (সংকীর্ণ) হয়ে যাওয়া। রক্তনালি সরু হয়ে যাওয়ার জন্য ওই টেরিটরিতে (অংশ) রক্ত চলাচল কমে যায়, যার জন্য ওই টেরিটরির রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতার যেটা লক্ষণ, তৈরি হয়। সেটাই হচ্ছে রক্তনালির অসুখ।
২. ব্রেনের ক্ষেত্রে যেটাকে আমরা বলি, ওই একটা টেরিটরিতে বড় রক্তনালি হোক, ছোট রক্তনালি হোক, যখন বন্ধ হয়ে গেল, তখন ওই টেরিটরির ফাংশনটা (কার্যক্রম) আসলে থাকবে না। আমরা গ্রসলি (মোটাদাগে) বলি সবার মনে রাখার জন্য, ফাস্ট। বি ফার্স্ট (প্রথমেই শুরু হবে বি অক্ষর দিয়ে)। বি ফর ব্যালেন্স। ইমব্যালেন্স হয়ে যাবে। এফ ফর ফেস। মুখ বাঁকা হয়ে যাবে। এ ফর আর্মস। হাত-পা অবশ বা আংশিক দুর্বল হয়ে যাবে। এস ফর স্পিচ। কথা জড়িয়ে যাবে বা কথা বলতে পারবেন না। এই লক্ষণগুলো থাকলে টি ফর টেলিফোন। সাথে সাথে ফোন করে হসপিটালে যেতে হবে।
৩. টি অনেক ইম্পরট্যান্ট। টি ফর টাইম অলসো (টি দিয়ে সময়ও বোঝায়)।
৪. এমনিতে গ্রসলি আমরা বলি স্ট্রোক দুই ধরনের। একটি হচ্ছে স্কিমিক স্ট্রোক, হেমোরেজিক স্ট্রোক। যেটা হার্টের ক্ষেত্রে আমরা ইউজুয়ালি (সাধারণত) বলি রক্তনালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য হয়। আমাদের রক্তনালি ছিড়ে গিয়েও স্ট্রোক হতে পারে। একটা জায়গায় রক্তক্ষরণ হলো। আরেকটা রক্তনালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য স্ট্রোক হতে পারে, যার জন্য আমাদের আসলে গ্রসলি যদি বলি, হসপিটালে যাওয়ার আগে চিকিৎসা শুরু করার সুযোগ কম। কারণ জানি না কোন স্ট্রোক হয়েছে। রক্তক্ষরণ হলে যেটা ওষুধটা দেয়া যাবে, রক্তনালি বন্ধ হয়ে গেলে সে ওষুধটা আসলে ক্ষতিকর বা উল্টা কথা। সে জন্য আমি যত দ্রুত হসপিটালে যাব, রক্তনালি বন্ধ হয়ে গেলে রক্তনালি খুলে দিতে পারলে উনি সুস্থ হয়ে যাবেন।