ডেইরি, পোল্ট্রি,মৎস্য ও কৃষিবিষয়ক অনলাইন নিউজ ও ভিডিও পোর্টাল

সর্বশেষ :

    হাত-পা অবশ হওয়া রোগ জিবিএস

    ডাঃ এম ইয়াছিন আলী

    জিবিএস রোগের নামটি আমাদের কাছে অপরিচিত হলেও অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গুলিয়ান-বারি-সিনড্রোম রোগটির সংক্ষিপ্ত নাম হলো জিবিএস। জিবিএস (গুলিয়ান-বারি-সিনড্রোম) হলো ইমিউন প্রতিক্রিয়াজনিত রোগ। ক্যামপাইলো ব্যাকটার জিকুনি নামক একটি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের পর জিবিএস দেখা দেয়। সাধারণভাবে এটাই মনে করা হয়। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই আকস্মিকভাবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যাওয়াসহ চলাফেরার সক্ষমতা হারায়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিচ্ছন্নতা ও কীটনাশকযুক্ত খাবার গ্রহণ এবং সঠিক স্বাস্থ্যশিক্ষার অভাবে এ রোগে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে।

    লক্ষণ

    সাধারণত দেখা যায় কয়েক দিন থেকে পাতলা পায়খানার সঙ্গে একটু জ্বর হয়। এর কয়েক সপ্তাহ পর হাত-পায়ে অবশ অবশ ভাব এবং ক্রমান্বয়ে হাত ও পায়ের শক্তি কমে যায়। এমনকি হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতা থাকে না। অর্থাৎ শরীরের পেশিগুলো অবশ হতে থাকে। আস্তে আস্তে শরীরের পেরিফেরি বা নিচের থেকে ওপরের অংশে আসতে থাকে। ভয়ের ব্যাপার হলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেসপিরেটরি মাংসপেশি প্যারালাইজড হয়ে যায়। এর ফলাফল শ্বাস নিতে না পেরে ৫ থেকে ৬ শতাংশ রোগী অকালেই প্রাণ হারায়।

    কাদের ঝুঁকি বেশি

    গুলিয়ান-বারি-সিনড্রোমে নারী-পুরুষ উভয়েই আক্রান্ত হতে পারে। বয়সভেদে এ রোগের প্রকোপের তেমন পার্থক্য দেখা যায় না। তবে অপরিচ্ছন্নতা ও কীটনাশকযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

    করণীয়

    একিউট বা জরুরি অবস্থায় রোগী যখন হাত-পা নাড়তে পারে না। এমনকি শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এ রকম মনে হলে রোগীকে দ্রুতই বিশেষায়িত হাসপাতালে নিতে হবে। রোগীর অবস্থা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজন পড়ে।

    চিকিৎসা-পরবর্তী সেবা

    এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেরে উঠতে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থার উন্নতির পর রোগীকে হাত-পায়ের শক্তি বাড়ানো ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

    এ ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে রেখে দিনে তিন থেকে চারবার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দিতে হয়। বিশেষ করে হাত-পায়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য ইলেকট্রিক্যাল সিমুলেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেনদেনিং এক্সারসাইজ, ব্যালেন্স ট্রেনিং, গ্রেট ট্রেনিং ইত্যাদি চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

    লেখকঃ ডাঃএম ইয়াছিন আলী,চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালট্যান্ট,ঢাকা সিটি ফিপিওথেরাপি হাসপাতাল,ধানমন্ডি ,ঢাকা

    Share on facebook
    Facebook
    Share on twitter
    Twitter
    Share on linkedin
    LinkedIn
    Share on whatsapp
    WhatsApp
    Share on email
    Email