ডেইরি, পোল্ট্রি,মৎস্য ও কৃষিবিষয়ক অনলাইন নিউজ ও ভিডিও পোর্টাল

সর্বশেষ :

    বিভিন্ন জাত মাছের পুষ্টি ও গুণাগুণ

    সেবককণ্ঠ
    নদীমাতৃক আমাদের দেশে রয়েছে ছোট থেকে বড় প্রচুর মাছ।আমরা জানি বাঙালি মানেই মাছে ভাতে বাঙালি। মাছে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। একাধিক গবেষণা বলছে, স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের পুষ্টি বৃদ্ধিতে মাছের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। তৈলাক্ত মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।মাছে যথেষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম ও আয়োডিন। মাছ হলো খনিজ পদার্থ আর ভিটামিনের খনি।পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন ৭০ থেকে ৭৫ গ্রাম করে মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন। হার্টের অসুখ ও মস্তিষ্কের রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় মাছের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড।আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের পুষ্টিবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন কোষের প্রাচীর (সেল মেমব্রেন) গঠন করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। গবেষকরা বলছেন, যারা সপ্তাহে তিন দিন বা এর বেশি মাছ খান তাদের মস্তিষ্কের নিউরন কোষ অনেক বেশি সুগঠিত ও বেশি কর্মক্ষম।জানা যাক বিভিন্ন মাছের গুনাগুন-

    ছবি সংগৃহীত

    রুই মাছঃ রুই বাংলাদেশের বহুল পরিচিত মাছ। প্রতি গ্রাম রুই মাছে রয়েছে ১৬.৪ গ্রাম আমিষ, ১.৪ গ্রাম চর্বি, ৬৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম , ২২৩ মিলিগ্রাম ফসফরাস থাকে। রুই বাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

    কাতলা মাছঃ কাতলা মাছ সুস্বাদু পানির মাছ। কাতলা মাছ বায়ু পিত্ত ও কফ কমায় এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

    শোল মাছঃশোল মাছ মানবদেহে হাড় ও মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে, রুচি বাড়ায়। ১০০ গ্রাম শোল মাছে ৯৪ ক্যালরি, ১৬.২ গ্রাম প্রোটিন, ১৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৫ গ্রাম মিলিগ্রাম আয়রন, ৯৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১ হাজার ৮০ মাইক্রোগ্রাম জিংক। শোল মাছ পায়খানা কষায়, পিত্ত ও রক্তের জন্য খুবি জরুরী।মাগুর মাছঃ মাগুর মাছ পুষ্টিগুন ব্যাপক। প্রতি ১০০ গ্রাম মাগুর মাছে ৩২.০ গ্রাম আমিষ, ২.০ গ্রাম চর্বি, ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস এবং ০.৭ মিলিগ্রাম লোহা থাকে। মাগুর মাছ রক্ত বাড়ায়, রক্তশূন্যতায় রোগীদের জন্য খুবি ভাল।

    পুঁটি মাছঃ পুঁটি মাছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই মাছ আমাদের দরকারি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। প্রতি ১০০ গ্রাম পুঁটি মাছে আছে শক্তি- ১০৬ ক্যালরি, প্রোটিন -১৮.১ গ্রাম, চর্বি-২.৪ গ্রাম ও ক্যালসিয়াম-১১০ মিলিগ্রাম।

    ট্যাংরা মাছঃ ট্যাংরা মাছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই মাছ আমাদের দরকারি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। প্রতি ১০০ গ্রাম ট্যাংরা মাছে আছে, শক্তি-১৪৪ ক্যালরি, প্রোটিন -১৯.২ গ্রাম, চর্বি- ৬.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭০ মিলিগ্রাম, আয়রন ২ মিলিগ্রাম।

    মলা মাছঃ মলা মাছের পুষ্টিগুণ ও প্রচুর রয়েছে। এই মাছ আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরন করে। রক্তস্বল্পতা দূর করতে মলা মাছের তুলনা হয় না। ১০০ গ্রাম মলা মাছে আছে ৮৫৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৫.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ভিটামিন ‘এ ২০০০ ইউনিট এবং জিংক ৩.২ মিলিগ্রাম।

    কাঁচকি মাছঃ কাঁচকি মাছের উপকারিতা প্রচুর। কাঁচকি মাছে যতেস্ট পরিমানে ক্যালসিয়াম রয়েছে। এই মাছ খেলে মানবদেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে। তাছাড়া আমাদের প্রয়োজনীয় প্রোটিন কাঁচকি মাছ থেকে পেতে পারি।এই মাছে রয়েছে আয়রন ও চর্বি। যা আমাদের দেহে আয়রন ও চর্বির চাহিদা পূরণ করে। নিয়মিত ছোট মাছ খেলে শরীর সুস্থ ও সবল থাকবে। কাঁচকি মাছের পুষ্টিগুণ ছোট মাছের মধ্যে অন্যতম। এই মাছ কাটার ঝামেলা না থাকায় সহজে রান্না করা যায়।খেতে অনেক সুস্বাদু। কাঁচকি মাছ নিয়মিত খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম কাচকি মাছে আছে প্রোটিন ১২.৭ গ্রাম, চর্বি ৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৭৬ মিলিগ্রাম , আয়রন ২.৮ মিলিগ্রাম।

    ফলি মাছঃ ফলি মাছের উপকারিতা আমরা অনেকেই জানি না। এই মাছে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম রয়েছে । যা বাড়ন্ত শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলি মাছে প্রচুর পরিমানে ফসফরাস রয়েছে। এটি দেহে ফসফরাস এর চাহিদা পূরণ করে। এছাড়াও এ মাছে প্রোটিন ও আয়রন রয়েছে।

    ফলি মাছ কাঁটাযুক্ত হলে ও এর চাহিদা রয়েছে প্রচুর। এই মাছ দেহের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। ফলি মাছের পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় অনের কাছে বেশ পছন্দ।

    প্রতি ১০০ গ্রাম ফলি মাছে আছে প্রোটিন ২০.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪৫০ মিলিগ্রাম।

    Share on facebook
    Facebook
    Share on twitter
    Twitter
    Share on linkedin
    LinkedIn
    Share on whatsapp
    WhatsApp
    Share on email
    Email