ডেইরি, পোল্ট্রি,মৎস্য ও কৃষিবিষয়ক অনলাইন নিউজ ও ভিডিও পোর্টাল

সর্বশেষ :

    বিষণ্ণতা কাটাবেন কীভাবে গ্রীষ্ম কালে?

    আমাদের বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ।গ্রীষ্ম ঋতু আমাদের অলস এবং বিষণ্ণ করে তোলে। এ ধরনের চরম আবহাওয়া বিরক্তির কারণ এবং মেজাজ খারাপ করে দিতে পারে। কিন্তু যদি খুব বেশি দিন মেজাজ খারাপ থাকে, দুশ্চিন্তা, হতাশা , উদ্বেগ এবং নিজেকে মূল্যহীন ভাবার মত অনুভূতি সৃষ্টি হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনি গ্রীষ্মকালীন বিষণ্ণতায় ভুগছেন।
    গ্রীষ্মকালীন বিষণ্ণতা হচ্ছে সিজনাল অ্যাফেকটিভ ডিসঅর্ডার বা ‘এসএডি বা স্যাড’ সমস্যা। স্যাড হচ্ছে একধরনের বিষণ্ণতা রোগ। এ ধরনের সমস্যা বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের লোকদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

    যদিও শীতের মৌসুমে স্যড ট্রিগার করার সম্ভাবনা বেশি তবে গ্রীষ্ম মৌসুমেও এ ধরনের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হতে পারে। ভারতের সিনিয়র সাইকিয়াট্রিস্ট ডাঃ জ্যোতি কাপুরের মতে, যদিও বেশিরভাগ বিষণ্ণতা শীতকালে ছোট দিন এবং কম সূর্যালোকের সাথে যুক্ত তবে কিছু লোকের গ্রীষ্মের শুরুতে বিষণ্ণতা শুরু হতে পারে এবং শীতের সময় তাদের বিষণ্ণতা শেষ হতে পারে।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ দিন এবং ক্রমবর্ধমান তাপ এবং আর্দ্রতা গ্রীষ্মকালীন বিষণ্নতায় ভূমিকা পালন করতে পারে। গ্রীষ্মের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিক কাজকর্মে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা, শক্তির অভাব, উদ্বেগ, কার্বোহাইড্রেটের লোভ এবং ওজন বৃদ্ধি, চরম ক্লান্তি এবং শক্তির অভাব, আশাহীনতা বা মূল্যহীনতার অনুভূতি, মনোযোগ দিতে সমস্যা, বিরক্ত বা উত্তেজিত বোধ করা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ (হাত ও পা) যা ভারী মনে হয়, সামাজিক ক্রিয়াকলাপগুলি থেকে সরে যাওয়া সহ সাধারণত আনন্দদায়ক কার্যকলাপে আগ্রহ হ্রাস, ঘুমের সমস্যা (সাধারণত অতিরিক্ত ঘুম), মৃত্যু বা আত্মহত্যার চিন্তা ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে পারেন।
    গ্রীষ্মকালীন বিষণ্ণতার কারণ
    ডা. সোনাল আনন্দের মতে, এ মৌসুমে অনেকের কাজের রুটিনে আসে পরিবর্তন যা একটি বাড়তি চাপের সৃষ্টি করে। গ্রীষ্মকালে বেশির ভাগ মানুষ ছুটি কাটিয়ে থাকে যার ফলে খরচের পরিমাণ বেড়ে যায় । এবং এ বাড়তি খরচ পরিচালনা করা কঠিণ হতে পারে এবং এটি উদ্বেগ ও বিষণ্নতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এছাড়া অসহনীয় তাপমাত্রা এবং আদ্রতা জীবন দুর্বিষহ এবং একই সাথে অস্বস্তিকর বোধ সৃষ্টি করতে পারে।
    গ্রীষ্মের বিষণ্ণতার পিছনে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখছেন, এ সময় আমরা সাধারণত ছোট পোশাক পরিধান করে থাকি, যার ফলে আমাদের শরীরের অঙ্গগুলোর খুঁত সহজেই সকলের চোখে ধরা পড়ে এবং এসব বিষয় চিন্তা করেই অনেকে গ্রীষ্মকালীন বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন।
    এ ধরনের বিষণ্ণতা কাটাবেন যেভাবে
    বিশেষজ্ঞদের মতে , গ্রীষ্মের বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতে একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুশৃঙ্খল জীবনধারায় নিজেকে অনুপ্রণিত করা গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণগুলোর জন্য বিষণ্নতা আসতে পারে। যেমন- তাপ বা আদ্রতা ,আর্থিক চাপ, বাহ্যিক ক্রুটি এগুলো আগে শনাক্ত করতে হবে।
    ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। যদিও দীর্ঘ রৌদ্রজ্জ্বল দিন এবং উষ্ণ রাত ঘুমানো কঠিণ করে তোলে- যা মেজাজ খারাপ, হরমোনের সমস্যা এবং অ্যাসিডিটির মতো শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে পারে ।
    এ সময়ে যোগব্যায়াম করা ,ধ্যান করার অভ্যাস করতে হবে যা সাধারণত আমাদের শরীরকে শীতল করে। সময়সূচি মেনে চলার চেষ্টা আমাদের অনেকটাই উৎপাদনশীল করে তোলে যার ফলে এ ধরনের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
    চাপমুক্ত থাকতে হবে। যে কাজগুলো পছন্দের যেমন নাচ, সংগীতের র্চচা বা গান শুনা, নতুন কোন ভাষা শেখা অথবা বাগান করা যেতে পারে। অর্থাৎ নিজেকে সময় দিতে হবে। সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং প্রতিদিন সকালে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে যেন সকালের স্নিগ্ধ আলো গায়ে মাখানো যায়। যা শরীররকে ভালো বোধ করতে সাহায্য করবে।

    Share on facebook
    Facebook
    Share on twitter
    Twitter
    Share on linkedin
    LinkedIn
    Share on whatsapp
    WhatsApp
    Share on email
    Email