আদালত প্রতিবেদক
নানা জল্পনা কল্পনা ও নাটকীয়তার পর অবশেষে বহুল আলোচিত মিতু হত্যা মামলায় স্বামী বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামী করে মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পিবিআই। উল্লেখ্য যে,সাবেকপুলিশ সুপার বাবুল আক্তার কে নির্যাতনের দায়ে ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জর্জ আদালতে র্পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬জনের বিরুদ্ধে তার আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ একটি অভিযোগ দায়ের করেন তার পর ফেনী কারাগারে ফেনী থানা ওসি বাবুল আক্তারকে হুমকি দেওয়া অভিযোগে তার নিরাপত্তা চেয়ে ১২সেপ্টেম্বর একই আদালতে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেন তার আইনজীবী। উক্ত দুটি অভিযোগ ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানীর জন্য সময় ধার্য্য করেছেন আদালত। এরই মধ্যে স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তার সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন পিবিআই।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের সুপার নাঈমা সুলতানার নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ওমর ফারুকসহ এ সংস্থার একটি দল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আদালতে গিয়ে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
নাঈমা সুলতানা বলেন, মোট সাতজনকে এ মামলার অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে।
তদন্তে আমরা বাবুল আক্তারকে আসামি হিসেবে পেয়েছি। আমরা আগে বারবার বলেছি হত্যাকাণ্ড কেন হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর আমরা তদন্ত করেছি। ১ নম্বর আসামি বাবুল আক্তার কীভাবে জড়িত তা আমরা পেয়েছি।
মামলার সাত আসামির মধ্যে বাকিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম ও খায়রুল ইসলাম।
এর আগে সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের আসামি করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আবু নছর গুন্নু, শাহ জামান, সাইদুল ইসলাম শিকদার, নুরুন্নবী ও রাশেদুল ইসলামের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। তাদের মধ্যে নুরুন্নবী ও রাশেদুল ইসলাম সেই হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন।
২০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে মোট সাক্ষী করা হয়েছে ৯৭ জনকে। তাদের পাঁচজন এ মামলার বর্তমান ও সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা।
২০৮৪ পৃষ্ঠার মূল কেইস ডকেট এবং ২১ ধরনের আলামত জমা দেওয়া হয়েছে মামলার অভিযোগপত্রের সঙ্গে। একটি ব্যাগে করে এসব নধিপত্র আদালতে নিয়ে আসা হয়, সেই ব্যাগের ওপর লাগানো ছিল মিতুর একটি বড় আকারের রঙিন ছবি।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার এডিসি কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছি। সংশ্লিষ্ট আদালত এটা দেখবেন। আগামী ১০ অক্টোবর এ মামলার ধার্য দিন আছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন সে সময় পুলিশ সুপার পদে থাকা বাবুল আক্তার।
মিতু হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে ২০২১ সালের ১২ মে তার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর সেদিনই বাবুলসহ ৯ জনকে আসামি করে নতুন হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন।
আইনি জটিলতার কারণে এ বছরের ২৫ জানুয়ারি মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৬ মার্চ সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে বাবুলের করা মামলার তদন্ত শেষ করতে বলে আদালত।বাবুল আক্তার এখন নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
সম্পাদক: অধ্যাপক মুহাম্মদ ইব্রাহীম কুতুবী। প্রকাশক: খালেদ মোঃ আরাফাত আমিন হোসাইনি। সম্পাদকীয় কার্যালয়: রুম নং: ২১৮) আইনজীবী শাপলা ভবন, কোর্ট হিল, চট্টগ্রাম। যোগাযোগ: 01711-468110, 01674-489764।[email protected], [email protected],[email protected]
Copyright © 2025 সেবক কন্ঠ. All rights reserved.