
আমরা অনেকেই জানি না পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে নিমপাতার ব্যবহার সর্ম্পকে। নিমপাতায় রয়েছে বিভিন্ন ভেষজ উপাদান ও রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে নিমপাতা বেশ কাজে আসে। পোল্ট্রি খামারেও নিমপাতা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। চলুন জেনে নেই পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে নিমপাতার ব্যবহার সম্পর্কে-
পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে নিমপাতার ব্যবহারঃ
পোল্ট্রি খামারে নিমের ফুল, পাতা ,বাকল তেল ব্যবহার করে অনেক রোগের চিকিৎসা করা হয়। নিচে পোল্ট্রি খামারে নিমপাতার ব্যবহার দেওয়া হল-
১। কাঁচা হলুদের সাথে নিমপাতা বেটে পেস্ট করে বসন্তের গতিতে লাগলে এবং বড়ি বানিয়ে পোল্ট্রি কে খাওয়ালে পক্স বা বসন্ত ভালো হয়ে যায়।
২। নিমপাতার সাথে সামান্য পরিমান আদা চিমটি পরিমান লবন মিশিয়ে গরম করে একটি পরিষ্কার পাতলা সুতি কাপড়ে লাগিয়ে তা দ্বারা সেক দেবার মতন করে মুসে দিলে পোল্ট্রির চোখ ফোলা ও ব্যাথা দ্রুত সেরে যায়।
৩। নিমের পাতা বা ফুল বেটে রস করে পানিতে মিশিয়ে বা সেদ্ধ করে পোল্ট্রির গায়ে স্প্রে করলে উকুন বা উকুন জাতীয় পোকার উপদ্রব কমে যায়।
৪। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের ভূমিকা অপরিসীম।নিমপাতার সাথে সামান্য নিমের ছাল দিয়ে পানি সেদ্ধ করে, সে পানি সকালে খাবার দেবার আগে পোল্ট্রি কে দিতে হবে। এতে করে কৃমির উপদ্রব কমে যাবে।
৫। নিমের রস হজম শক্তি বাড়াবে,সেই সাথে পেট পরিস্কার রাখবে ও পেট ফোলা কমাবে।
৬। নিমপাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে যে কোন আঘাত জনিত ক্ষত বা পোকামাকড়ের কামড়ের ওপর প্রলেপ দিলে এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করবে এবং দ্রুতই সেরে উঠবে।
৭। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বহুগুণ। ১ চা চামুচ ১ লিটার পানিতে দিতে হবে।
৮। নিমপাতার সেদ্ধ পানি খামারে স্প্রে করলে ভাইরাস জনিত রোগের উপদ্রব হ্রাস পায়।প্রতিদিন স্প্রে করতে পারলে মশার উপদ্রব কমে যাবে।
৯। পোল্ট্রির শরীরের কোনো জায়গায় যদি ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে,নিমপাতা বেটে লাগিয়ে দিলে, এর এন্টি মাইক্রোবাইয়াল উপাদান ক্ষত নিরাময়ে দ্রুত কাজ করবে।
১০। নিমের রসের সাথে খাঁটি মধু খাওয়ালে ঠান্ডা লাগা ও নাক দিয়ে পানি ঝরা কমে।
ব্যবহার বিধিঃ
নিমপাতার রস ১ চা চামুচ ১ লিটার পানিতে (৫ মি লি)।
নিম পাতার গুঁড়া ১চা চামুচ ১ লিটার পানিতে (৫ গ্রাম)।
নিমপাতা বাটা ১চা চামুচ ১লিটার পানিতে ।
নিমপাতা ও ছাল সিদ্ধ গাঢ় পানি ১চা চামুচ (৫মি লি) ১ লিটার পানিতে।
সতর্কতাঃ
নিমপাতা অবশ্যই রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে।
গুঁড়ো ২ মাসের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না।কারণ এতে গুনা গুন নষ্ট হয়ে যায়।
নিমপাতা সেদ্ধ পানি ৩ দিন পর্যন্ত রাখা যাবে।
ভেষজ মিশ্রিত পানি ৬ ঘন্টার বেশি রাখা যাবে না। নিয়মিত নিমের ব্যবহারের ফলে খামারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ব্যাপক উপকার পাওয়া সম্ভব। সবচেয়ে বড় বেপার ওষুধের খরচ কমে যাবে অধিক অংশে।